ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জের পাটগাতী ইউনিয়নের টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ সন্তান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
বাবা শেখ লুৎফর রহমান ও মা সায়েরা খাতুন। চার মেয়ে ও দুই ছেলের সংসারে মুজিব ছিলেন তৃতীয়। তার বড় বোন ফাতেমা বেগম, মেজ বোন আছিয়া বেগম, সেজ বোন হেলেন ও ছোট বোন লাইলী; ছোট ভাই শেখ আবু নাসের। ১৯২৭ সালে শেখ মুজিব গিমাডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। নয় বছর বয়সে ১৯২৯ সালে গোপালগঞ্জ পাবলিক স্কুলে ভর্তি হন এবং এখানেই ১৯৩৪ সাল পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। ১৯৩৭ সালে গোপালগঞ্জ মাথুরানাথ ইনস্টিটিউট মিশন স্কুলে সপ্তম শ্রেণীতে ভর্তি হন। ১৯৩৪ থেকে চার বছর তিনি বিদ্যালয়ের পাঠ চালিয়ে যেতে পারেননি। কারণ, তার চোখে জটিল রোগের কারণে সার্জারি করাতে হয়েছিল এবং এ থেকে সম্পূর্ণ সেরে উঠতে বেশ সময় লেগেছিল। গোপালগঞ্জ মিশনারি স্কুল থেকে তিনি ম্যাট্রিক পাস করেন।
১৯৩৮ সালে ১৮ বছর বয়সে তার সঙ্গে ফজিলাতুন্নেছার বিয়ে হয়। এই দম্পতির ঘরে দুই মেয়ে ও তিন ছেলের জন্ম হয়। মেয়েরা হলেন শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। আর তিন ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শেখ রাসেল। তিন ছেলেই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট রাতে আততায়ীর হাতে নিহত হন।
রাজনৈতিক সূচনা
বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় ১৯৩৯ সালে মিশনারি স্কুলে পড়ার সময় থেকেই। ওই বছর স্কুল পরিদর্শনে এসেছিলেন তদানীন্তন অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক এবং পরবর্তী সময়ে বাংলার প্রধানমন্ত্রী। স্কুলের ছাদ সংস্কারের দাবিতে একটি দল নিয়ে শেখ মুজিব তাদের কাছে যান। ১৯৪০ সালে নিখিল ভারত মুসলিম ছাত্র ফেডারেশনে যোগ দেন। সেখানে তিনি এক বছর মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হন। ১৯৪২ সালে এন্ট্রান্স পাস করার পর কলকাতা ইসলামিয়া কলেজে (বর্তমান নাম মাওলানা আজাদ কলেজ) আইন পড়ার জন্য ভর্তি হন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত এই কলেজ তখন বেশ নামকরা ছিল। এই কলেজ থেকে সক্রিয়ভাবে ছাত্ররাজনীতি শুরু করেন। ১৯৪৩ সালে তিনি বেঙ্গল মুসলিম লীগে যোগ দেন এবং অগ্রণী বাঙালি মুসলিম নেতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সান্নিধ্যে আসেন। এখানে তার ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য বিষয় ছিল একটি পৃথক মুসলিম রাষ্ট্র হিসেবে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন। ১৯৪৩ সালে তিনি বঙ্গীয় মুসলিম লীগের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন।
১৯৪৪ সালে বর্তমান বাংলাদেশের কুষ্টিয়ায় নিখিল বঙ্গ মুসলিম ছাত্রলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এই সম্মেলনে শেখ মুজিব বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। তিনি কলকাতায় বসবাসকারী ফরিদপুরবাসীদের সংগঠন ‘ফরিদপুর ডিস্ট্রিক্ট অ্যাসোসিয়েশন’-এর সেক্রেটারি মনোনীত হন। এর দুই বছর পর ইসলামিয়া কলেজ ছাত্র ইউনিয়নের মহাসচিব নির্বাচিত হন। ১৯৪৭ সালে অর্থাৎ দেশ বিভাগের বছর মুজিব কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ইসলামিয়া কলেজ থেকে বিএ ডিগ্রি লাভ করেন।
পাকিস্তান-ভারত পৃথক হয়ে যাওয়ার পর শেখ মুজিব পূর্ব পাকিস্তানে ফিরে এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তি হন। ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠা করেন পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ।
বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ
‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’
ঐতিহাসিক ভাষণে বঙ্গবন্ধুর সে ডাকেই একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে জাতি। নয় মাসের সশস্ত্র যুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের আত্মদান, আড়াই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানি ও সমগ্র জাতির বিশাল ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয় স্বাধীনতা।
সেদিন ঢাকা ছিল মিছিলের শহর। ঢাকা ও আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে সব মিছিলই এসে থামে রমনা রেসকোর্স ময়দানে। রেসকোর্স রূপ নেয় জনসমুদ্রে। ধর্ম-বর্ণ-গোত্রনির্বিশেষে লাখো মানুষে সয়লাব হয়ে যায় বিশাল ময়দান। বাতাসে উড়ে বাংলার মানচিত্র আঁকা লাল সূর্যের অসংখ্য পতাকা। আকাশে উত্থিত বাঁশের লাঠির সঙ্গে লাখো কণ্ঠের সেøাগানে কেঁপে উঠে জনসমুদ্র, শহর।
ঘড়ির কাঁটায় তখন বিকেল ৩টা ২০ মিনিট। সাদা পায়জামা-পাঞ্জাবি আর হাতাকাটা কালো দজহরদ/// কোট পরে বাঙালির প্রাণপুরুষ বঙ্গবন্ধু দৃপ্ত পায়ে ওঠেন মঞ্চে। দাঁড়ান মাইকের সামনে। জানিয়ে দেন তার ঐতিহাসিক ভাষণ।
রেসকোর্স ময়দান থেকে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ সরাসরি প্রচারের সমস্ত আয়োজন ছিল রেডিও পাকিস্তান ঢাকা কেন্দ্রের। প্রচার শুরুও হয়েছিল। কিন্তু সামরিক কর্তৃপক্ষ প্রচার বন্ধ করে দিলে বেতারের সমস্ত বাঙালি কর্মচারী বেতার ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। বন্ধ হয়ে যায় বেতার। ঢাকার বাইরে ছড়িয়ে পড়ে নানা গুজব। গভীর রাতে অবশ্য সামরিক কর্তৃপক্ষ বঙ্গবন্ধুর পূর্ণ ভাষণ সম্প্রচারের অনুমতি দেয়।
মূল ঘোষণা
‘এটাই হয়তো আমার শেষ বার্তা, আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন। আমি বাংলাদেশের মানুষকে আহ্বান জানাই, আপনারা যেখানেই থাকুন, আপনাদের সর্বস্ব দিয়ে দখলদার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত প্রতিরোধ চালিয়ে যান। বাংলাদেশের মাটি থেকে সর্বশেষ পাকিস্তানি সৈন্যটিকে উৎখাত করা এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের আগ পর্যন্ত আপনাদের যুদ্ধ অব্যাহত থাকুক।’
মুজিবকে গ্রেপ্তার করে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয় এবং ফয়সালাবাদের একটি জেলে কড়া নিরাপত্তায় রাখা হয়। পাকিস্তানি জেনারেল রহিমুদ্দিন খান মুজিবের মামলা পরিচালনা করেন। মামলার আসল কার্যপ্রণালি এবং রায় কখনোই জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়নি।
বাংলাদেশের শাসন
শেখ মুজিবুর রহমান অল্পদিনের জন্য অন্তর্র্বর্তীকালীন রাষ্ট্রপতি ছিলেন এবং পরবর্তী সময়ে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৭০ সালে নির্বাচিত রাজনীতিবিদেরা নতুন রাষ্ট্রের অন্তর্র্বর্তী সংসদ গঠন করেন। মুক্তিবাহিনী এবং অন্য মিলিশিয়াদের নিয়ে নতুন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী গঠিত হয় এবং ১৭ মার্চ ভারতীয় বাহিনীর কাছ থেকে ক্ষমতা বুঝে নেয়।
১৫ আগস্ট : শোক নয় শক্তি
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিহত হওয়ার পর ঘটনাস্থল ধানমন্ডির বাড়িসহ আরও দুটি বাড়িতে গিয়েছিলেন তিনি। আগ্নেয়াস্ত্রের বুলেটে ক্ষত-বিক্ষত লাশ এবং সেগুলো দাফন করার দায়িত্ব পালন করে সে সময়ের ঢাকা সেনানিবাসের স্টেশন হেডকোয়ার্টার্সে কর্মরত স্টাফ অফিসার আলাউদ্দিন আহমেদ একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছিলেন নিজের দপ্তরে।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের বিয়োগান্ত ঘটনা সম্পর্কে মেজর আলাউদ্দিনের ইংরেজিতে লিখিত সেই প্রতিবেদনের বাংলা অনুবাদ এখানে প্রকাশিত হলো :
১৫ আগস্ট ১৯৭৫ সালের ঘটনায় নিহতদের অবস্থা ও দাফন-কাফন :
১৯৭৫ সালের ১৬ আগস্ট রাত তিনটায় ঢাকা সেনানিবাসের স্টেশন কমান্ডারের আদেশে আমি প্রয়াত শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি যাই। স্টেশন কমান্ডার আগেই পৌঁছে গিয়েছিলেন। মেজর বজলুল হুদা ও তার লোকজন পাহারা দিচ্ছিলেন বাড়িটি। হুদা আমাকে প্রথমে বাধা দিলেও পরে ঢোকার অনুমতি দেন।
সড়ক নম্বর ৩২, শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি : সব লাশ সিঁড়ির গোড়ায় আনা হলো। রাখা হলো কাঠের কফিনে। বরফ আনা হয়েছিল। রক্ত, মগজ ও হাড়ের গুঁড়ো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল প্রথম তলার দেয়াল, জানালার কাচ, মেঝে ও ছাদে। বাড়ির সব বাসিন্দাকেই খুব কাছে থেকে গুলি করে হত্যা করা হয়। গুলির আঘাতে দেয়ালগুলোও ঝাঁঝরা হয়ে যায়। গুলির খোসাগুলো মেঝেতে পড়ে ছিল। কয়েকটি জানালার কাচ ভেঙে গুঁড়িয়ে যায়। চারপাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল ঘরের জিনিসপত্র, গিফটবক্স ও সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বিয়েগুলোর উপহারের প্যাকেট। পবিত্র কোরআন শরিফও মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখলাম।
শেখ মুজিবের বাড়িতে নয়জনকে হত্যা করা হয়েছিল। লাশগুলো (প্রদত্ত রিপোর্ট মতে) যে অবস্থায় পাওয়া যায়:
শেখ মুজিব : প্রথম তলার সিঁড়ির মাঝখানটায় যে সমতল অংশটি তার তিন-চার ধাপ ওপরে। চশমার ভাঙা কাচ ও একটি পাইপ সিঁড়িতে পড়ে ছিল।
শেখ কামাল : অভ্যর্থনা কক্ষে
টেলিফোন অপারেটর : অভ্যর্থনা কক্ষে
শেখ নাসের : নিচতলার সিঁড়িসংলগ্ন বাথরুমে
বেগম মুজিব : মূল বেডরুমের সামনে
সুলতানা কামাল : মূল বেডরুমে
শেখ জামাল : মূল বেডরুমে
রোজী জামাল : মূল বেডরুমে
শিশু রাসেল : মূল বেডরুমে, তার দুই ভাবির মাঝখানে বাড়ির সব বাসিন্দাকেই খুব কাছে থেকে গুলি করে হত্যা করা হয়। দেখে মনে হচ্ছিল, তাদের সবাই তাৎক্ষণিকভাবে প্রাণ হারান।
শেখ মুজিব : প্রথম তলার সিঁড়ির মাঝখানে যে সমতল জায়গাটা তার তিন-চার ধাপ ওপরে একেবারে কাছে থেকে গুলি করে শেখ মুজিবকে খুন করা হয়। তার তলপেট ও বুক ছিল বুলেটে ঝাঁঝরা। শেখ মুজিব সব সময় চশমা পরতেন এবং তার ধূমপানের অভ্যাস ছিল। তার চশমা ও তামাকের পাইপটি সিঁড়িতে পড়ে ছিল। পরনে চেক লুঙ্গি ও পাঞ্জাবি। চশমার একটি গ্লাস ভাঙা। রক্তে পাঞ্জাবির রং ছিল গাঢ় লাল। একটি বুলেট তার ডান হাতের তর্জনীতে গিয়ে লাগে এবং আঙুলটি প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
শেখ কামাল : কামালের বুক ও তলপেটে তিন থেকে চারটি বুলেট বিদ্ধ হয়। তার পরনে ছিল ট্রাউজার। নিচতলায় তাকে খুন করা হয়।
টেলিফোন অপারেটর : তাকে নিচতলায় খুন করা হয়।
শেখ নাসের : শেখ নাসেরকে খুন করা হয় বাথরুমের কাছে। তার হাত উড়ে গিয়েছিল। গুলিতে তার দেহের বেশ কিছু স্থান ছিল ক্ষত-বিক্ষত। তার গায়ে কোনো পোশাক ছিল না এবং লাশ বিছানার চাদরে মোড়ানো ছিল।
বেগম মুজিব : বেগম মুজিবকে বুকে ও মুখমণ্ডলে গুলি করা হয়। তার পরনে ছিল সুতি শাড়ি এবং কালো রঙের ব্লাউজ। গলায় মাদুলি বাঁধা একটি সোনার নেকলেস। কনিষ্ঠা আঙুলে ছোট্ট একটি আংটি। তখনো তার পায়ে ছিল একটি বাথরুম সিøপার!
সুলতানা কামাল : সুলতানা কামালের বুক ও তলপেটে গুলি লাগে। পরনে ছিল শাড়ি ও ব্লাউজ।
শেখ জামাল : শেখ জামালের মাথা চিবুকের নিচ থেকে উড়ে গিয়েছিল। পরনে ট্রাউজার। ডান হাতের মধ্যমায় ছিল একটি মুক্তার আংটি। সম্ভবত এটি ছিল তার বিয়ের আংটি।
রোজী জামাল : তার মুখটি দেখাচ্ছিল বিবর্ণ, মলিন। মাথার একাংশ উড়ে গিয়েছিল। তার তলপেট, বুক ও মাথায় গুলি করা হয়। পরনে ছিল শাড়ি ও ব্লাউজ।
শিশু রাসেল : সম্ভবত আগুনে তার পা ঝলসে যায়। মাথা উড়ে গিয়েছিল। পরনে ছিল হাফপ্যান্ট। লাশ একটি লুঙ্গিতে মোড়ানো ছিল।
মেঝেতে ছড়ানো-ছিটানো ছিল সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জামাল ও কামালের বিয়ের অনেক উপহারসামগ্রী এবং গিফট প্যাকেট। কিছু বাক্স ছিল ফাঁকা। কামালের কক্ষে রুপার তৈরি অনেক জিনিসপত্র দেখা যায়। সিঁড়িতে ছিল আল্পনা আঁকা। অভ্যর্থনা কক্ষটি ছিল নোংরা। আমি ওপরতলা থেকে শুনলাম, নিচতলায় হুদা চিৎকার করছেন। তিনি এ বাড়ি থেকে কিছু জিনিসপত্র চুরি করায় কয়েকজন সিপাহিকে গালাগাল দিচ্ছিলেন।
সড়ক নম্বর ১৩/১, ধানমন্ডি, শেখ মনির বাড়ি : মনি ও তার সন্তানসম্ভবা স্ত্রীকে তাদের এই বাড়িতে খুন করা হয়। তাদের বাড়ির দিকে ‘সেনাবাহিনীর গাড়ি’ আসতে দেখে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব ছেড়ে সরে যান। বাড়িটি ছিল আংশিক তছনছ করা। মেঝেতে স্পষ্ট রক্তের দাগ। মাঝের টেবিলে একটি অ্যালুমিনিয়ামের বাটিতে কিছু ভিজানো চিড়া।
৩৭ মিন্টো রোড, আবদুর রব সেরনিয়াবাতের বাড়ি : মন্ত্রীর বাড়িটি ছিল ফাঁকা। ড্রয়িংরুমজুড়ে দেখা গেল জমাট বাঁধা রক্ত। বাড়ির নিরাপত্তা পুলিশ আগেই পালিয়ে গিয়েছিল!
সেরনিয়াবাত ও শেখ মনি এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গ থেকে সংগ্রহ করা হয়। লাশগুলো ছিল বিকৃত। তাপ ও আর্দ্রতা লাশের ক্ষতি করে। লাশ থেকে দুর্গন্ধ বেরোচ্ছিল। বনানী গোরস্তানে দাফনের জন্য লাশগুলো সেনানিবাসে নিয়ে আসা হলো। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের লাশ ছাড়া ৩২ নম্বর সড়কের অন্য সবার লাশও আরেকটি ট্রাকে করে সেখানে আনা হয়।
শেয়ার করুনঃ