পাকিস্তানি কিংবদন্তি অধিনায়ক ইমরান খান। ২৩ বছর আগের একটি স্মৃতি। সবাই ভুলে গেলেও তিনি তা কখনো ভুলবেন না। বর্তমানে রাজনীতি নিয়ে পুরোদমে ব্যস্ত থাকলেও তার পক্ষে তা ভুলে যাওয়া অসম্ভব। কেননা ২৩ বছর আগে ১৯৯২ সালে মেলবোর্নে তার নেতৃত্বেই ইংল্যান্ডকে হারিয়ে প্রথমবার ক্রিকেট বিশ্বকাপ জিতেছিল পাকিস্তান। তাই তার সঙ্গে সেই প্রিয় মাঠ মেলবোর্ন একটি অন্যরকম ভালোবাসায় জড়ানো।
দীর্ঘ ২৩ বছর পর আবারও ক্রিকেটে মেলবোর্নের নাম এল অন্যরকম একটি আবহ নিয়ে। বারবার ঘুরেফিরে এলেও ক্রিকেটে লম্বা সময় পেরিয়ে ২০১৫ সালে আবারও বিশ্বকাপের ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে মেলবোর্নে। ১৯৯২ সালের পর আবারও নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে যৌথভাবে ২০১৫ বিশ্বকাপের আয়োজন করবে অস্ট্রেলিয়া। ২৯ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে ২০১৫ বিশ্বকাপের ড্র ঘোষণা করেন আইসিসির প্রধান নির্বাহী ডেভিড রিচার্ডসন। উদ্বোধনী ম্যাচে মুখোমুখি হবে শ্রীলঙ্কা ও নিউজিল্যান্ড।
বাংলাদেশ রয়েছে গ্রুপ বি-তে। যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, শ্রীলঙ্কা, নিউজিল্যান্ড ও বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে কোয়ালিফায়ার দ্বিতীয় ও তৃতীয় দল। তবে টাইগাররা বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে কাদের বিপক্ষে মাঠে নামবে, তা এখনো নির্ধারণ হয়নি। আইসিসির কোনো সহযোগী দেশের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী ক্যানবেরায় ১৮ ফেব্রুয়ারি খেলবে বাংলাদেশ। এরপর ২১ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় ম্যাচে ব্রিসবেনে বাংলাদেশ মাঠে নামবে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। ২৬ ফেব্রুয়ারি মেলবোর্নে টাইগারদের প্রতিপক্ষের নাম এশিয়ার পরাশক্তি শ্রীলঙ্কা। এরপর ৫ মার্চ নিউজিল্যান্ডের নেলসেনে আইসিসির কোনো সহযোগী কোনো দলকে প্রতিপক্ষ হিসেবে পাবে বাংলাদেশ। ৯ মার্চ অ্যাডিলেডে ইংল্যান্ডের সঙ্গে লড়তে হবে বাংলাদেশকে। আর গ্রুপ পর্বে মুশফিকদের শেষ ম্যাচ ১৩ মার্চ হ্যামিল্টনে, যেখানে প্রতিপক্ষ আরেক স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড। সাতটি দলকে নিয়ে গড়া গ্রুপ থেকে পয়েন্ট তালিকার সেরা চারটি দল যাবে নকআউট পর্বে। এরপর ১৮, ১৯, ২০ ও ২১ মার্চ চারটি কোয়ার্টার ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে, যার প্রতিটিতে রিজার্ভ ডে রয়েছে। প্রথম সেমিফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে অকল্যান্ডে ২৪ মার্চ, দ্বিতীয় সেমিফাইনাল সিডনিতে ২৬ মার্চ এবং ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে।
বাংলাদেশের জন্যও ২০১৫ বিশ্বকাপ একটি চ্যালেঞ্জের নাম। কেননা, ১৯৯৯ বিশ্বকাপে প্রথম পা রাখার পর এখন পর্যন্ত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ হয়নি বাংলাদেশিদের। এই প্রথম অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে বিশ্বকাপ খেলতে যাবে বাংলাদেশ। গ্রুপের প্রতিপক্ষ বিচারে অবশ্য অনেকটা পিছিয়ে টাইগাররা। সাবেক দুই বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া ও শ্রীলঙ্কা রয়েছে বাংলাদেশের গ্রুপে। শক্তির বিচারে এই দলের দলের চেয়ে অনেকটা পিছিয়ে মুশফিকরা। তবে তাদেরও হারানোর অতীত রেকর্ড রয়েছে বাংলাদেশের। অন্য দুই শক্তিশালী প্রতিপক্ষের নাম নিউজিল্যান্ড ও ইংল্যান্ড। এই দুই দল বিশ্বকাপ না জিতলেও শক্তির হিসাবের খাতায় বাংলাদেশের চেয়ে অনেক এগিয়ে তারা। তবে এখানেও আশার কথা টাইগারদের জন্য। দুই দলের বিপক্ষেই জয়ের অভিজ্ঞতা রয়েছে তাদের। বাংলাদেশের জন্য আশার কথা হলো, আইসিসির দুই সহযোগী দলকে পাবে টাইগাররা, যাদের হারানোর সামর্থ্য রাখে বাংলাদেশ।
এদিকে গ্রুপ এ-তে রয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারত, পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জিম্বাবুয়ে, আয়ারল্যান্ড এবং চতুর্থ কোয়ারিফায়ার দল। ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু করে ২৯ মার্চ পর্যন্ত ১৪টি শহরে ৪৪ দিনে ৪৯টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিটি দল ৬টি করে পোল ম্যাচ খেলবে। সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ড, অ্যাডিলেড ওভাল, এমসিজি ও উইলিংটনে কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। সেমিফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ড ও অকল্যান্ডস ইডেন পার্কে।
২০১৫ ক্রিকেট বিশ্বকাপ গ্রুপিং
গ্রুপ এ গ্রুপ বি
ইংল্যান্ড ভারত
শ্রীলঙ্কা দক্ষিণ আফ্রিকা
অস্ট্রেলিয়া পাকিস্তান
নিউজিল্যান্ড ওয়েস্ট ইন্ডিজ
বাংলাদেশ জিম্বাবুয়ে
বাছাই-২ আয়ারল্যান্ড
বাছাই-৩ বাছাই-৪
বাংলাদেশের ম্যাচসমূহ
তারিখ প্রতিপক্ষ ভেন্যু
১৮ ফেব্রুয়ারি বাছাইপর্ব পেরিয়ে আসা দল ক্যানবেরা
২১ ফেব্রুয়ারি অস্ট্রেলিয়া ব্রিসবেন
২৬ ফেব্রুয়ারি শ্রীলঙ্কা মেলবোর্ন
০৫ মার্চ বাছাইপর্ব পেরিয়ে আসা দল নেলসন
০৯ মার্চ ইংল্যান্ড অ্যাডিলেড
১৩ মার্চ নিউজিল্যান্ড হ্যামিল্টন
শেয়ার করুনঃ