পুরো এক মাস সংযম পালনের পর আসছে খুশির ঈদ। সবাই চায়, এই বিশেষ উৎসবমুখর দিনটিতে নিজেকে একটু অন্যরকম, সবার থেকে আলাদা সাজে উপস্থাপন করতে। আর এই চেষ্টাকেই আরেক ধাপ এগিয়ে নিতে শুধু আপনার জন্যই আমরা সহজ কিছু টিপস নিয়ে হাজির হয়েছি। চলুন, জেনে নেওয়া যাক, কেমন হতে পারে আপনার ঈদের সারা দিন ও রাতের সাজ।
চাঁদরাত
শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি যেটাকে বলে সেটাই আমরা করে থাকি চাঁদরাতে অর্থাৎ ঈদের ঠিক আগের রাতটিতে। চলুন, জেনে নেই কম সময়ে কীভাবে ঘরে বসেই একটু রূপচর্চা করে নেওয়া যায়। যেকোনো সাজের আগেই মুখটাকে পরিষ্কার করে নেওয়া জরুরি। যদি একান্তই আপনি সময়ের অভাবে পারলারে গিয়ে ফেসিয়াল না করাতে পারেন, তবে ঈদের আগের রাতটিতে এ কাজটি আপনি ঘরে বসেই করতে পারেন। এর জন্য মুখে প্রথমে ফেসওয়াশ লাগিয়ে খুব ভালোভাবে মুখটা পানি দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করুন, এরপর মুখে লাগান ক্লিনসিং মিল্ক এবং ম্যাসাজ করুন কিছুক্ষণ। আবার পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে টাওয়েল বা টিস্যু পেপার দিয়ে মুছে মুখে লাগান ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম। ব্যাস, হয়ে গেল আপনার ঘরে বসে চটপট ফেসিয়াল।
এরপর হাত ও পায়ের নখের পরিচর্যা, অর্থাৎ মেনিকিউর এবং পেডিকিউর। প্রথমে গরম পানিতে বেশ কিছুক্ষণ নখগুলো ভিজিয়ে রাখুন, যতক্ষণ পর্যন্ত নখের চারপাশের চামড়া নরম না হয়। বাজারে বিভিন্ন ধরনের মেনিকিউর-পেডিকিউর কিট পাওয়া যায়। সেগুলো ব্যবহার করে পরিষ্কার করে নিন আপনার নখগুলো এবং পায়ের পাতা ও গোড়ালি ঝামা দিয়ে ঘষে পরিষ্কার করুন। সবশেষে আবারও গরম পানিতে নখ ধুয়ে নখে লাগিয়ে নিন আপনার ঈদের পোশাকের সঙ্গে ম্যাচ করে এমন নেইলপলিশ।
যেকোনো বাঙালি নারীর ক্ষেত্রেই মেহেদি ছাড়া রোজার ঈদটা যেন একেবারে মাটি। যেকোনো বিউটি পারলারে অথবা ঘরে বসেই আপনার পছন্দের ডিজাইন অনুযায়ী হাতে মেহেদি লাগিয়ে নিন।
এবারের ঈদটা যেহেতু একটু গরমে পড়েছে, সে ক্ষেত্রে চুল নিয়ে আপনাকে বেশ ঝামেলা পোহাতে হতে পারে। এ ব্যাপারে আপনি সময় বাঁচাতে যেটা করতে পারেন সেটা হচ্ছে, ঈদের আগের রাতেই চুলটা শ্যাম্পু দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে এরপর শুকিয়ে আয়রন, ব্লোড্রাই করে রাখতে পারেন, তাহলে ঈদের সকালে অন্যান্য ব্যস্ততার মধ্যে গোসলে কম সময় দিলেও চলবে।
ঈদের আগের রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে শেষ কাজটা হচ্ছে ঈদের পোশাকটা হাতের কাছে ঠিক করে রাখুন যাতে পরের দিন খুঁজতে না হয়।
সকাল
ঈদের দিন সকালে সব বয়সের বাঙালি নারীই মোটামুটি ঘরের কাজ নিয়েই ব্যস্ত থাকেন। তাই ঈদের সকালের সাজটা অবশ্যই হতে হবে স্নিগ্ধ এবং হালকা। খেয়াল রাখতে হবে, যাতে সাজের প্রত্যেকটি অনুষঙ্গই যেন হালকা হয়। যেমন, মেকআপে ক্ষেত্রে ন্যাচারাল কালারের ফেস পাউডার ব্যবহার করা যেতে পারে। এর আগে অবশ্যই ফেসওয়াশ অথবা টোনার দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে নিতে হবে। এরপর হালকা করে ব্লাশন লাগিয়ে নিন, যাতে বোঝা না যায়। চোখে শুধু একটু কাজল লাগান, তাতেই আপনার চোখের সৌন্দর্যটুকু ফুটে উঠবে। ঠোঁটে গাঢ় রঙের লিপস্টিক ব্যবহার না করে শুধু একটু লিপগ্লস লাগয়ে নিলেই যথেষ্ট। চুল নিয়ে যদি ঝামেলা মনে হয় তাহলে পাঞ্চক্লিপ দিয়ে বেঁধে ফেলুন চুলগুলো অথবা খোঁপাও করতে পারেন। কপালে লাগান একটা টিপ। আর হালকা কছু গয়না, কানে ছোট দুল, হাতে কয়েকটা চুড়ি অথবা ব্রেসলেট আর গলায় মাটির গয়না, শাড়ি, সালোয়ার, কামিজ যা-ই পরুন না কেন, এ সাজ মানিয়ে যাবে বেশ।
দুপুর-বিকেল
সকালের চেয়ে দুপুরবেলার সাজটা একটু গাঢ় হতে পারে। তবে অবশ্যই জমকালো নয়। দুপুর অথবা বিকেলের দিকের সাজের বেস মেকআপটা হতে হবে একেবারেই হালকা। গালে হালকা রঙের ব্লাশন লাগানো যেতে পারে, আর চোখটাকে কিছুটা হাইলাইট করে সাজাতে পারেন। সে ক্ষেত্রে চোখে ভারী করে কাজল লাগিয়ে নিন, তবে আইশ্যাডোটা হবে হালকা, যেমন গোলাপি, সাদা অথবা সিলভার; আর চিকন করে আইলাইনার। মাসকারাটাও লাগাতে পারেন ভারী করে। গরম বুঝে চুলটা বেঁধে রাখতে পারেন পাঞ্চক্লিপ অথবা কাঁটা দিয়ে। অথবা এলো খোঁপা করে গুঁজে দিতে পারেন দু-একটি ফুল। ঠোঁটে ম্যাট লিপস্টিক ব্যবহার করলে স্বস্তি পাবেন।
রাত
ঈদ উৎসবের সবচেয়ে গাঢ় সাজটা হয় রাতে। অবশ্য যেকোনো উৎসবেই রাতের সাজটা জমকালো হওয়া উচিত। সে ক্ষেত্রে চোখে ভারী করে কাজল লাগিয়ে নিন, আইশ্যাডোটা হবে খুব গাঢ়, যেমন ব্ল্যাক, গোলাপি অথবা সিলভার; আর মোটা করে আইলাইনার। মাসকারাটাও লাগাতে পারেন ভারী করে। গরম বুঝে চুলটা বাঁধতে পারেন বা খোলা ছেড়ে রাখতে পারেন। ঠোঁটে গাঢ় লিপস্টিক ব্যবহার করতে পাবেন।
শেয়ার করুনঃ