নানা সমস্যায় নগরজীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। ‘মাছে-ভাতে বাঙালি’ এই প্রবাদ বাঙালিদের কাছে এখন রূপকথার গল্পের মতো। কারণ, বর্তমানে জিনিসপত্রের দাম যে হারে বাড়ছে, মাছ এখন সাধারণ বাঙালিদের ধরাছোঁয়ার ঊর্ধ্বে। শুধু মাছই নয়, দাম বেড়েছে নিত্যব্যবহার্য সব পণ্যের। বাজেট পাসের আগেই বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। বাজেট ঘোষণার আগেই যেহেতু জানা যায়, কোন কোন পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়ানো হচ্ছে আর কোনটার কমানো হচ্ছে, তাই এই সুবিধা কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কাজে লাগান প্রতিবছর বাজেট পাশের আগ মুহূর্তে। আর এতে সমস্যায় পড়ে নিম্ন ও নির্ধারিত আয়ের সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে, রমজান ও ঈদের আগে দ্রব্যমূল্যের এই ঊর্ধ্বগতি সামাল দেওয়া তাদের জন্য খুবই কষ্টকর হয়ে পড়ে। আর রাজধানী ঢাকায় এই দুর্ভোগ সবচেয়ে বেশি। অথচ ঢাকার বাইরে এসব নিত্যব্যবহার্য পণ্যের মূল্য অনেক কম। কেন এই অসামঞ্জস্যতা? উৎপাদনকারী থেকে শুরম্ন করে ভোক্তাদের কাছে পৌঁছাতে পৌঁছাতেই পণ্যের দাম বেড়ে যায় কয়েক গুণ। রাসত্মায় বিভিন্ন স্থানে চাঁদা-টোল দিয়ে; দালাল, পাইকারি ব্যবসায়ী, খুচরা ব্যবসায়ীদের নানান হাত ঘুরে তবেই পণ্য ভোক্তাদের কাছে পৌঁছায়।
প্রতিনিয়ত বেড়ে চলেছে নিত্যব্যবহার্য জিনিসপত্রের দাম, অথচ বাড়ছে না সাধারণ মানুষের আয়। জিনিসপত্রের দামের সাথে পালস্না দিয়ে বাড়ছে বাস-বাড়ির ভাড়া। প্রতিবছর ভাড়া বাড়ানো যেন একটা রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তার সাথে এখন যুক্ত হচ্ছে নানা রকমের সার্ভিস চার্জ। সনত্মানদের লেখাপড়া করাতেও এখন প্রচুর খরচ। শিড়্গা-বাণিজ্যের কারণে স্কুল-কলেজের ভর্তি ফি, মাসিক বেতন, বই-পুসত্মকের দাম, বাধ্যতামূলক টিউশনির খরচের চাপে সাধারণ মানুষ হিমশিম খেয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া অসুস্থ হলে চিকিৎসা করানো যেন আরও অসুস্থ হয়ে যাওয়ার শামিল। চিকিৎসকের ফি, নানা রকম টেস্টের খরচ, ওষুধপত্রের দাম-এত খরচ জোগাড় করা সাধারণ মানুষের সাধ্যের বাইরে চলে যায়। বর্তমানে চিকিৎসকদের ফি ও AvKvkPz¤^x| ওষুধ-পথ্যের দামও এত বেশি থাকে যে নির্ধারিত আয়ের মানুষজন প্রায়শই দীর্ঘমেয়াদি ওষুধের খরচ বহন করতে না পেরে চিকিৎসা বন্ধ করে দেয়। আর নিম্নবিত্তদের ভাগ্যের হাতে শপে দেওয়া ছাড়া কোনো উপায়ই থাকে না।
খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিড়্গা, চিকিৎসা-এগুলো মানুষের মৌলিক অধিকার। অথচ বর্তমানে এই মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ করা সাধারণ মানুষের সাধ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে। সরকার যদি একটু সহযোগিতা করে, তবে সাধারণ মানুষের পড়্গে এই চাহিদাগুলো পূরণ করা অনেকাংশে সম্ভব হবে।
শামীমা
মিরপুর-৭, ঢাকা।